|
বরিশালে বিদেশি সংস্থায় চাকরি দেয়ার প্রলোভনে টাকা হাতিয়ে নিল প্রতারক চক্র
বরিশালে বিদেশি সংস্থায় চাকরি দেয়ার প্রলোভনে টাকা হাতিয়ে নিল প্রতারক চক্র
|
|
নিজস্ব প্রতিবেদক ::: বরিশালে বিদেশি সংস্থায় চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে। বিদেশে সংস্থায় চাকরি দেওয়ার নাম করে আরও ৩০ থেকে ৪০ জনের কাছ থেকে তারা অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) কোতয়ালী মডেল থানা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন রেদাউন উল্লাহ অভি নামে এক ভূক্তভোগী যুবক। তিনি নগরীর ২১ নং ওয়ার্ডস্থ গোরস্থান রোড এলাকার মৃত হানিফের ছেলে। অভিযুক্তরা হলেন- ভান্ডারিয়া জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী ও ওয়াহাব ঘড়ামির ছেলে মোঃ রুস্তম আলী, এসআই মর্তুজা, দুলাল হাওলাদার ওরফে ল্যাংরা দুলাল ও জামাল। তাদের সকলের বাড়ি পিরোজপুরে। লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়- অভিকে আমেরিকান সংস্থায় পঙ্গু ও ত্রান তহবিলের সুপার ভাইজার পোষ্টে চাকরি দেওয়ার জন্য তার বোনের বাসায় এসে ওই চক্রটি ৩০ লক্ষ টাকা নেয় এবং বলে মাসে বেতন হবে ৩ লক্ষ টাকা। এমনকি বিগত তিন বছরের বেতন দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দেয়, তাতে প্রায় এক কোটি ৮ লক্ষ টাকা দেয়া কথা। আর গুলসানে একটি ফ্লাট বাড়ি দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। এখন চাকরিও দেয় না টাকাও ফেরত দেয় না। টাকা ফেরত চাইলে নম্বর ব্লাক লিস্ট করে রাখে। পরে অভি জানতে পারেন আরও ৩০ থেকে ৪০ জনের কাছ থেকে এভাবে টাকা নিয়ে প্রতারণা করা হয়েছে। ওনাদের কোন সংস্থা নেই। ভুক্তভোগীরা আরও বলেন, তারা এই এই চক্রটির প্রতারণার বিষয়টি টের পেয়ে টাকা ফেরতের জন্য তাগাদা দিতে থাকেন। কিন্তু নানা কৌশলে সে বুঝিয়ে সময়ক্ষেপন করেন। কোনভাবেই টাকা ফেরত দিচ্ছেনা। ভুক্তভোগী অভি বলেন- পিরোজপুর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী মোঃ রুস্তম আলী বিগত ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে আমার কাছ থেকে আমেরিকান একটা সংস্থার চাকরি দেওয়ার নাম করে ভোটার আইডি কার্ড, সিভি ও ৩০ লক্ষ টাকা করে নেন। এছাড়াও ৩০ থেকে ৪০ জনের কাছ থেকে ২-৫ লক্ষ টাকা নিয়েছেন। তাদের আশ্বাস দেয় সংস্থাটি ১৫ লক্ষ টাকা করে অনুদান হিসেবে দিবে। কিন্তু পরবর্তীতে খোঁজ নিয়ে দেখা যায় রকমের কোন সংস্থায়ী নেই। তার সাথে জড়িত ছিল পুলিশের এসআই মর্তুজা, ল্যাংড়া দুলাল এবং জামাল হোসেন। কিন্তু তারা চাকরিও দেয়নি, টাকাও ফেরত দিচ্ছে না। অভি বলেন- এভাবে তারা বছরের পর বছর আশ্বাস দিয়ে মানুষ মানুষকে ঘুরাচ্ছে। যখন তারা জানতে পারে এই জিনিসটা ভুয়া তখন তাকে চাপ সৃষ্টি করে টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য। কিন্তু সে টাকা রাজি হয় নি এবং বছরের পর বছর মাসের পর মাস ঘুরাতে থাকে। মোঃ রুস্তম আলীর বিরুদ্ধে পূর্বে আরো ঘুষের অভিযোগ রয়েছে ভান্ডারিয়ায় এবং খুলনা জেলায়। তিনি বলেন- আমার কাছ থেকে সে প্রথমে ১৫ লক্ষ টাকা নেয় এবং পরবর্তীতে আরো ১৫ লক্ষ টাকা নেয় ওই সংস্থায় চাকরি দেবার নাম করে। যেহেতু মোঃ রুস্তম আলী সম্পর্কে আমার মামা হয় তাই সে ডকুমেন্টস ছাড়াই তাকে টাকা দিয়ে দেই। এখন যখন তার কাছে টাকা দাবি করা হয় তখন সে টাকা দিতে রাজি হচ্ছে না এবং সমস্ত ঘটনা অস্বীকার করছে। কিন্তু আমার কাছে সমস্ত প্রমাণ, মিটিংসহ যত কার্যকলাপ হয়েছে তার প্রমাণ রয়েছে। ভুক্তভোগী অভি আরও বলেন, আমরা টাকা ফেরত চাইলে আমাকে তার ছেলে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে। এই প্রতারক চক্রটি অনেক মানুষকে সর্বস্বান্ত করেছে। টাকা ফেরত চাইলে নম্বর ব্লাক লিস্ট করে রাখে। ফলে তাদের সঙ্গে কোন প্রকার যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। তারা প্রতারক চক্রটি গ্রেপ্তার করে আইনী প্রতিকারসহ টাকা ফেরত চান। এদিকে ভুয়া সংস্থার সার্টিফিকেট বের করে জনসমক্ষে দেখানো এবং দ্রুত জড়িতদের আইনের আনার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী অভি। এ বিষয়ে জানতে ভান্ডারিয়া জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী মোঃ রুস্তম আলীর মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেন নি। এ বিষয়ে কোতয়ালী মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন- অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। |